রোবট কি, কিভাবে কাজ করে, রোবট এর গঠন এবং রোবটের সুবিধা অসুবিধা


(Robot)রোবট কি:-


 প্রযুক্তির যে শাখায় রোবটের নকশা, ডিজাইন, গঠন প্রক্রিয়া, কাজ এবং প্রয়োগ ক্ষেত্র সম্পর্কে আলোচনা করা হয় এই শাখাটি রোবটিক্স বলা হয়। রোবট হচ্ছে এক ধরনের ইলেক্ট্রো ম্যাকানিকাল যান্ত্রিক ব্যবস্থা যা সংক্রিয়ভাবে বা কোন ব্যক্তির নির্দেশে কাজ করে পারে। এটি তৈরি হয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নীতিতে। 

রোবট অর্থ কি রোবট


 কে আবিষ্কার করেন


রোবট তৈরির উপাদান


রোবট শব্দটি কোন ভাষা থেকে এসেছে


 রোবট কি এবং কিভাবে কাজ করে


 বাংলাদেশের তৈরি রোবট


রোবট সোফিয়া


আজকের দিনের অধিকাংশ রোবটিই বায়ো ইন্সপায়ার্ড রোবটিক্স ক্ষেত্রটির দ্বারা উৎসাহিত হয়ে তৈরি। সহজভাবে বলতে গেলে রোবটিক্সের সাধারণ বিষয় গুলো হল কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইঞ্জিনিয়ারিং এবং মনোবিদ্যা। প্রযুক্তিটি কম্পিউটার বুদ্ধিমত্তা সম্বলিত এবং কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত রোবট মেশিন তৈরি করে যেগুলো আকৃতিগত দিক থেকে অনেকটাই মানুষের মত হয় এবং অনেকটা মানুষের মতই দৈহিক ক্ষমতাসম্পন্ন হয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রেটিতে রোবটিকে যেসব বৈশিষ্ট্য দেওয়ার চেষ্টা করা হয় সেগুলো হলো:-


১) দৃষ্টিশক্তি বা ভিয্যুয়াল পারসেপশন

 ২) স্পর্শ বা স্পর্শ ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য ক্ষমতা

৩) নিয়ন্ত্রণ ও  মেনিপুলেশনের ক্ষেত্রে দক্ষতা বা নিপুণতা।

৪) যেকোনো স্থানে দৈহিকভাবে নড়াচড়ার ক্ষমতা বা লকোমোশন।

৫) কোন একটি গন্তব্যে কারোও রাবার পথকে যথাযথভাবে খুঁজে বের করার বুদ্ধিমত্তা বা নেভিগেশন


রোবটের ইতিহাস:-

রোবটিক শব্দটি এসেছে রোবট শব্দ থেকে যা প্রবর্তিত হয় চেক লেখক ও নাট্যকার ক্যারেল কেপেক এর একটি নাটক হতে যেটি 1920 সালে প্রকাশিত হয়। রোবটিক্স এর মূল বিষয়টি হলো রোবট কে ঘিরে। রোবট হলো কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র বা যন্ত্রমানব যা মানুষের অনেক কঠিন কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে করতে পারে। 



এর কাজের ধরণ দেখে মনে হবে এর ভেতর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা রয়েছে।  Robota শব্দটি মূলত স্লাভিক শব্দ হতে যার অর্থ হলো শ্রমিক। অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারি অনুযায়ী রোবট শব্দটি সর্বপ্রথম ব্যবহার করা হয় 1941 সালে প্রকাশিত আইজ্যাক অসিমভ এর ছোট সাইন্স ফিকশন গল্প শায়ার এ। মজার ব্যাপার হচ্ছে আইজ্যাক অসিমভ তার গল্পে কাল্পনিক রোবটের জন্য যে তিনটি সূত্র বা নিয়ম বেঁধে দিয়েছিলেন তথা রোবট কখনো মানুষের জন্য ক্ষতিকর হবে না। প্রথম নিয়ম ভঙ্গ না করে রোবট মানুষের সকল নির্দেশ পালন করবে এবং 1 ও 2 নং নিয়ম ভঙ্গ না করে রোবট নিজেদের রক্ষা করবে আধুনিক রোবট এর জন্য এই তিনটি সূত্র‌ই  ব্যবহৃত হয়ে থাকে। 



বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর পাতা থেকে বেরিয়ে প্রথম সত্যিকারে রোবট তৈরি করেন আমেরিকান উদ্ভাবক জর্জ চালস ডেভল। 1950 সালে তার তৈরি প্রথম ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবট এর নাম ছিল ইউনিমেড। এই রোবট তৈরির প্রজেক্ট এর উদ্যোক্তা ছিলেন আরেক আমেরিকান জোসেফ ফ্রেডরিক এঙ্গেলবাগ। রোবট তৈরি টেকনিক্যাল বিষয় তার অবদান না থাকলেও এবং তৈরিকৃত ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবট পেটেন্টে চালস ডেভল এর নাম থাকলেও উদ্যোক্তা হিসেবে সম্মান প্রদর্শন এ এন্জেলবাগকে রোবটিক্স এর জনক  স্বীকৃতি দেয়া হয়ে থাকে।


রোবট মানে কি মানুষের মত যন্ত্র হতে হবে তা নয়। রোবট এমন একটি যন্ত্র যা কখনো সম্পূর্ণরূপে  মানুষের মতো হবে তা নয়।  কখনো চেহারার আবার কখনো কাজের মধ্য দিয়ে, কখনো আবার দুভাবেই। অবশ্যই এমন ভাবে প্রোগ্রাম বেঁধে দেয়া হয়েছে যা প্রয়োজন অনুযায়ী নতুন করে বেঁধে দেওয়া যায়। সাধারণভাবে কোন যন্ত্র স্বয়ংক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারলেই মেটাতে রোবট বলা হবে এমন কিন্তু নয়।


এটিকে বড়জোর ইন্টেলিজেন্স সিস্টেম হিসেবে অভিহিত করা যেতে পারে। একটি যান্ত্রিক সিস্টেম কে তখনই রোবট হয়ে উঠবে যখন এতে মবিলিটি, মোশন, সেন্সিং এবং ইন্টেলিজেন্স এর সমন্বয় ঘটবে। আজকের দিনে রোবটিক্স দ্রুত বর্ধনশীল একটি ক্ষেত্র। প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সাথে সাথে গবেষণা নকশা এবং নতুন নতুন রোবট তৈরির ফলে বিভিন্ন ধরনের ব্যবহারিক উদ্দেশ্যে তা সে ঘরোয়া, বাণিজ্যিক, বেসামরিক কাজই হোক না কেন সব কাজেই রোবটকে ব্যবহার করা যায়। কিছু কিছু রোবট  প্রোগ্রাম অনুসারে কাজ করে আবার অনেকগুলো কে দূর থেকে লেজার রশ্মি বা রেডিও সিগন্যাল এর সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ করা যায়। 

আরো পড়ুন:- মোবাইল দিয়ে আয়

(Structure of robot) রোবটের গঠন:-

একটি রোবটকে নানা ধরনের উপাদানের সমন্বয়ে তৈরি করা হয়। নিচে এ সম্পর্কে বিস্তারিত বর্ণনা করা হলো:-


১) মোভেবল বডি

স্থানান্তরিত হওয়ার জন্য একটি রোবটে চাকা যান্ত্রিক সংযোগ সম্পন্ন পা  কিংবা অন্য কোনো ধরনের নড়াচড়া করতে সক্ষম যন্ত্রপাতি যুক্ত থাকে।


২) অ্য‌াকচুয়েটর

অ্যাকচুয়েটর হলো এক ধরনের মোটর যা স্বয়ংক্রিয়ভাবে ঘোরান বা যান্ত্রিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায়।  অ্যাকচুয়েটর থাকার কারণে একটি রোবট বিভিন্ন দিকে কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। এটি চালানোর জন্য শক্তি হিসেবে বিদ্যুৎ, হাইড্রলিক পাওয়ার ব্যবহার করা হয়ে থাকে। রোবটের শরীরে বিভিন্ন অংশের নড়াচড়া করানোর জন্য একাধিক বৈদ্যুতিক মোটর, হাইড্রোলিক সিস্টেম, নিউমেটিক সিস্টেম সমন্বয় তৈরিকৃত বিশেষ ব্যবস্থা হিসেবে পরিচিত। এদিকে মানুষের মত রোবটের হিসেবে অভিহিত করা যায়।


৩) পাওয়ার সিস্টেম 

একচুয়েটর কে কার্যকর করার জন্য রোবটের প্রয়োজন বৈদ্যুতিক সংযোগ এবং এর জন্য ইলেকট্রনিক  হোম রোবট সমূহ লেড এসিড ব্যাটারি এক্সটেনশন কড ব্যবহার করে।


৪) ইলেকট্রনিক সার্কিট


৫) প্রোগ্রাম কিটো মস্তিষ্ক বা কম্পিউটার

রোবট এর মধ্যে স্থাপিত প্রোগ্রাম কৃত মস্তিষ্ক বা কম্পিউটার এর সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে।যদি কোনো কারণে রোবটের আচরণ পরিবর্তন প্রয়োজন হয় সে ক্ষেত্রে এর ভেতরে থাকা কম্পিউটার রিপ্রোগ্রাম করা হয়।


৬) অনুভূতি

৭) পরিবর্তন করা

রোবটের হাত পা এর সাহায্যে এর আশেপাশের বস্তু গুলোর অবস্থান পরিবর্তন বা বস্তুটির পরিবর্তন করার পদ্ধতিকে ম্যানিপুলেশন বলা হয়।


রোবটের ব্যবহার:-

আমাকে প্রত্যহিক জীবনে নানা কাজে

আমরা রোবটের ব্যবহার করে থাকি। নিচে তা নিয়ে আলোচনা করা হলো:-

কম্পিউটার এইডেড ম্যানুফ্যাকচারিং এ রোড়ট ব্যবহার ব্যবহার করা হয়। বিশেষ করে যানবাহন ও গাড়ির কারখানায় রোবট ব্যবহার করা হয়। 


বিপদজনক কাজে ও ভারী শিল্প-কারখানায় রোবট ব্যবহার করা হয়। যেসব কাজ অনেক বিপদজনক এবং মানুষের জন্য ক্ষতিকর এবং মানুষের পক্ষে করা দুঃসাধ্য এসব কাজগুলো রোবটের সাহায্যে করা হয়। যেমন ওয়েল্ডিং এবং খনির অভ্যন্তরে কাজ।


এছাড়াও পুঙ্খানুপুঙ্খরূপে বিভিন্ন পরীক্ষা করার জন্য, মেইল ডেলিভারি কাজে, ঝুঁকিপূর্ণ কাজে ও নিরাপত্তার কাজে রোবটের ব্যবহার করা হয়। 


একাজগুলোর পাশাপাশি পুলিশের সাহায্যকারী হিসেবে, সামরিক ক্ষেত্রে বিভিন্ন কাজে ঘরোয়া ও চিকিৎসার নানা কাজে ব্যবহার করা হয়। 


মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে রোবটের বর্তমানে ব্যাপক ব্যবহার করা হচ্ছে। যেখানে মানুষের পক্ষে যাওয়া অসম্ভব সেখানে রোবটকে পাঠানো হয় বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করার জন্য। সম্প্রতি মঙ্গল গ্রহের যুক্তরাষ্ট্রের নাসা কর্তৃক কিউরিসিটি নামে একটি রোবট পাঠানো হয়েছে।


রোবটের অসুবিধা সমূহ;-

রোবট আমাদের নানা কাজে সাহায্য করলেও এর কিছু খারাপ গুণ রয়েছে নিচে তা নিয়ে আলোচনা করা হলো:-


১) মানব করবেন মতর বোট কোনো আকস্মিক পরিবর্তিত পরিবেশ পরিস্থিতিকে মানিয়ে নিতে কাজ করতে পারে না যদি না তার প্রোগ্রাম পরিবর্তন করা হয়।


২) রোবট ব্যবহারের ফলে ধীরে ধীরে মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ছে। এতে বেকারত্ব বাড়ছে, মানুষ ধীরে ধীরে তার কর্মদক্ষতা হারিয়ে ফেলছে।


৩) রোবট ব্যবহার এখন অত্যন্ত ব্যয়বহুল এবং এর ব্যবস্থাপনা এখনও সহজ সাধ্য হয়নি।


আরো পড়ুন:-

হাতি মরলেও লাখ টাকা বাঁচলেও লাখ টাকা

বিভিন্ন প্রয়োজনীয়সেবা ও কল সেন্টার নাম্বার সমূহ


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ

Emoji
(y)
:)
:(
hihi
:-)
:D
=D
:-d
;(
;-(
@-)
:P
:o
:>)
(o)
:p
(p)
:-s
(m)
8-)
:-t
:-b
b-(
:-#
=p~
x-)
(k)