স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর উপায়

স্মৃতিশক্তি:-

স্মৃতিশক্তি বাড়ানোর চেষ্টা কমবেশি আমাদের সবার মধ্যেই আছে। আমরা চাই সবকিছু যেন আমাদের মনে থাকে। বাস্তবে সেটা সম্ভব নয় কিন্তু মনে রাখার পরিমাণ বাড়ানো সম্ভব। এজন্য আপনাকে কিছু নিয়ম কারণ মানতে হবে যেমন:-

১) লক্ষ্য করুন ও নোট নিন।

২) তথ্য সুশৃঙ্খলিত করুন।

৩) ডায়েরি ব্যবহার করুন।

৪) শরীর ফিট রাখুন।

৫) নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান।

৬) মগজ ব্যায়াম করুন।

৭) স্মৃতি সহায়ক।

৮) অন্যান্য সহায়ক।

৯) মনে রাখবেন কেউ স্বয়ংসম্পূর্ণ নয়।

আসুন এবার আমরা এখনই পয়েন্টগুলো কে বিস্তারিতভাবে জানে।

১) লক্ষ্য করুন ও নোট নিন

কোন কিছুকে গুরুত্ব দিয়ে না শুনলে বা না দেখলে তা আপনার মনে থাকবে না। সুতরাং নিজেকে বিষয়টি সম্পর্কে সজাগ ও সচেতন রেখে গুরুত্বসহকারে মনোযোগ দিন। যেমন এইমাত্র যার সঙ্গে আপনার পরিচয় হলো তার নামটি যদি আপনি মনে রাখতে চান তাহলে তা কয়েকবার নিজে নিজে আওড়ান এবং মনের ঠিক কোথায় নামটি রাখছেন খেয়াল রাখুন। টুকে নেওয়াটা খুব ভালো অভ্যাস।  প্রয়োজনীয় জিনিস টুকে নিলে তা মনে থাকে ভালো।

২) সুশৃঙ্খল হন

স্বাভাবের দিক দিয়ে গোছানো হলে অনেক কিছুই সহজে মনে থাকে। নির্দিষ্ট জিনিসপত্র সব সময় নির্দিষ্ট জায়গায় রাখলে প্রয়োজনের সময় হাতরে বেড়াতে হয় না।

৩) ডায়েরি ব্যবহার করুন

ডাইরিতে তারিখ অনুযায়ী করণীয়গুলো লিখে রাখলে কোন কাজ বাদ পড়ার সম্ভাবনা কম থাকে। তবে এজন্য মনে পড়ামাত্র কাজটির কথা ডায়েরিতে নির্দিষ্ট পাতায়  লিখতে হবে। আর প্রতিদিন ডায়েরি দেখতে হবে। সবচেয়ে ভালো হয় যদি প্রতিরাতে আগামীকালের কাজগুলো দেখে নেন।

৪) শরীর ফিট রাখুন

শরীর সুস্থ থাকলে মন অসুস্থ থাকে। তাই নিয়মিত ব্যায়াম করুন, পরিমিত আহার করুন, সিগারেট ছেড়ে দিন‌। কানে শুনতে চোখে দেখতে অসুবিধা থাকলে ডাক্তার দেখিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে অন্যে কি বলছে কি বলছে, বা করছে তা আপনি আর মিস করবেন না। ঘুমের জন্য ঘুমের বড়ি না খাওয়াই ভাল। আপনি আরো একটু এলার্ট থাকবেন তাহলে।

৫) নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করান

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানোর ব্যাপারটা আমাদের অভ্যাসের এর বাইরে। ফলে রোগ গভীর না হওয়া পর্যন্ত আমরা তার উপস্থিতি টের পায় না। প্রত্যেকের উচিত প্রতিবছর ডাক্তারকে দিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, চোখের সমস্যা সহজে ধরা পড়বে। আপনার বিষন্নতা  থাকলেতাও ধরা পড়বে। বিষন্নতাবিরোধী ওষুধ সেবন করলে বিষণ্নতা যত কমবে আপনার স্মৃতিশক্তি তত বাড়বে।

৬) মগজকে ব্যবহার করুন

শারীরিক কাজ না করলে শরীর দুর্বল হয়ে পড়ে। কেউ যদি কয়েক সপ্তাহ বিছানায়  শুধু শুয়েই থাকে তার পা সরু হয়ে যাবে, মাংসপেশিতে টান পড়বে, হাঁটতে অসুবিধা হবে। তেমনি কর্মক্ষমতা কমে যাবে। শিক্ষিত বুদ্ধিমান ব্যক্তি যারা নিয়মিত বুদ্ধির চর্চা করেন। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তাদের স্মৃতি হ্রাস তুলনামূলকভাবে কম হয়। তাই ভালো স্মৃতিশক্তি পেতে চাইলে নিয়মিত লিখুন, শিখুন ও কোন সমস্যা সমাধানে অংশগ্রহণ করুন। অলসভাবে বসে থাকলে স্মৃতিশক্তি ভোঁতা হয়ে যায়।

৭) স্মৃতি সহায়ক

মনে রাখার কিছু চমৎকার কৌশল আছে যেমন আসহবেনীকলা রংধনু সাত রং এর নাম মনে রাখাতে সাহায্য করে। মনে রাখার জন্য কল্পনা শক্তির ব্যবহার খুব জরুরী। যে  কল্পনাশক্তিকে যত চমৎকার ভাবে ব্যবহার করতে পারে তার মনে থাকবে ততবেশি। বিশেষত ভারতীয় বিজ্ঞাপনগুলো লক্ষ্য করলে দেখবেন পণ্যের বিজ্ঞাপনে কি অদ্ভুত সব কল্পনা ব্যবহার করা হচ্ছে। এসব‌ই মনে রাখার পক্ষে অত্যন্ত উপকারী।

৮) অন্যান্য সহায়ক

দিন তারিখ মনে রাখার জন্য আমরা ক্যালেন্ডার ঘড়ি ব্যবহার করছি। ঘুম থেকে ওঠার জন্য এলার্ম ঘড়ি ব্যবহার করছি। আজকাল মোবাইল ফোন ও অন্যান্য ইলেকট্রনিক যন্ত্রে রিমাইন্ডার নামে একটা ব্যবস্থা আছে যে আপনাকে কাজের কথাটা মনে করিয়ে দেবে। যে জিনিসটা নিয়ে বাইরে যেতে হবে তা দরজার মুখে রাখুন, ওষুধটা বেসিনের উপরের তাকে রাখুন, প্রয়োজনের জিনিস গুলো আগেই গুছিয়ে রাখুন। তাহলে কোন জিনিস ফেলে যাওয়া সম্ভাবনা থাকবে না।

৯) কেউই খুঁত বিহীন নয়

অধিকাংশ মানুষ যারা নিজেদের স্মরণশক্তি নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত নন তারাও যে সব কিছুই মনে রাখতে পারেন তা নয়। যুবকদের মধ্যে যারা ভুলে যায় তারা হয়তো অজুহাত দেখায় প্রেমে পড়েছি, মন অন্যদিকে নেই, পড়াশোনা নিয়ে খুব ব্যস্ত ইত্যাদি ইত্যাদি। বয়স্করা ভাবেন আমার কি স্মৃতিভ্রম দেখা দিল। আসলে এরা সবাই স্বাভাবিক। মানুষ একটু আধটু ভূলবেই।  যতক্ষণ পর্যন্ত এটা সাধারন কাজকর্মে ব্যাঘাত না ঘটাচ্ছে ততক্ষণ দুশ্চিন্তার কিছু নেই। সত্যিই যদি ভুলে  যাওয়ার ব্যাপারটা আপনাকে বেশ ভোগায় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন। সে ক্ষেত্রে যত দ্রুত চিকিৎসা শুরু করবেন ততই আপনার জন্য ভালো।

পরিশেষে বলতে চাই মানুষ ভুলে যাবে এটাই তার স্বভাব। তাই চেষ্টা করুন সব বিষয়গুলো মনোযোগের সাথে করার ইনশাআল্লাহ আমাদের স্মৃতি শক্তি আরো বৃদ্ধি পাবে‌।